
কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া মাঠে প্রতি বছরের মতো এবারও দেশের সবচেয়ে বড় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (৭ জুন) সকাল ৯টায় ঈদুল আজহার এই জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
শোলাকিয়ায় এবার ১৯৮তম জামাত অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে ইমামতি করেন মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ ছাইফুল্লাহ। জামাতে অংশগ্রহণ করতে দূর-দূরান্তের বিভিন্ন জেলা থেকে মুসল্লিরা আসেন। তাদের জন্য বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়, যাতে তারা সহজে জামাতে অংশ নিতে পারেন।
ঈদ জামাতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও সেনা সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। নিরাপত্তার জন্য মাঠে ৬৪টি সিসি ক্যামেরা, ৭টি ড্রোন ক্যামেরা, ৭টি ভিডিও ক্যামেরা, ৫০টি মেটাল ডিটেক্টর, ৮টি আর্চওয়ে এবং চারটি ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করা হয়।
ঈদুল ফিতরের জামাতে প্রায় ৬ লাখ মুসল্লি উপস্থিত হলেও কোরবানির ব্যস্ততার কারণে ঈদুল আজহার জামাতে কিছুটা কম মুসল্লি উপস্থিত ছিলেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
ঈদগাহ মাঠের ইতিহাসও উল্লেখযোগ্য। জানা যায়, মসনদ-ই-আলা ঈশা খাঁর ষষ্ঠ বংশধর দেওয়ান হয়বত খান বাহাদুর ১৮২৮ সালে কিশোরগঞ্জের জমিদারি প্রতিষ্ঠার পর নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় সাত একর জমির উপর এই ঈদগাহ মাঠ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথম জামাতে সোয়া লাখ মুসল্লি অংশগ্রহণ করেছিলেন, যার ফলে মাঠের নাম ‘সোয়া লাখি মাঠ’ রাখা হয়। পরবর্তীতে উচ্চারণের বিবর্তনে এটি ‘শোলাকিয়া’ নাম ধারণ করে। বর্তমানে এই মাঠে একসঙ্গে দুই লাখেরও বেশি মানুষ জামাতে নামাজ আদায় করতে সক্ষম হন। মাঠটির আয়তন প্রায় সাত একর এবং এতে ২৬৫টি কাতার রয়েছে।
ঈদ জামাত শুরুর পূর্বে রেওয়াজ অনুযায়ী, শোলাকিয়ায় নামাজ শুরু হওয়ার পাঁচ মিনিট আগে শটগানে তিনটি, তিন মিনিট আগে দুটি এবং এক মিনিট আগে একটি গুলির আওয়াজ করা হয়। এটি নামাজ শুরু করার সঙ্কেত হিসেবে বিবেচিত হয়।