
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে সোনাহাট সেতুর পাটাতন ভেঙে যাওয়ার কারণে সকল ধরনের যানচলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। রোববার (২৯ জুন) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সোনাহাট স্থলবন্দর থেকে পাথর বোঝাই একটি ট্রাক সেতুর মাঝামাঝি এসে স্টিলের অংশে পাটাতন ভেঙে আটকে যায়। এর ফলে সেতুতে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, যা বিশেষ করে এইচএসসি পরীক্ষার্থীসহ অফিসগামী লোকজনের জন্য মারাত্মক ভোগান্তির সৃষ্টি করেছে। সেতুর দুপাশে যানবাহনের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে এবং জরুরি প্রয়োজন মেটাতে লোকজনকে নৌকায় পারাপার হতে দেখা গেছে।
সেতুটি দীর্ঘদিন ধরে পুরনো ও মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় বিভিন্ন যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। মাঝে মধ্যেই সেতুটির পাটাতন দেবে ও ভেঙে যাওয়ার ঘটনা ঘটে, যা স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের জন্য ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেতুটির বিভিন্ন স্থানে পাটাতন ভেঙে গেছে, লোহার পাতি খুলে গেছে এবং সেতুর লাল অংশে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। তবুও জীবিকার তাগিদে স্থানীয় বাসিন্দারা ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন।
স্থানীয়দের মতে, ব্রিটিশ শাসনামলে ১৮৮৭ সালে লালমনিরহাট থেকে ভারতের গৌহাটি পর্যন্ত রেললাইন স্থাপন করা হয়, যার অংশ হিসেবে ভূরুঙ্গামারী উপজেলার দুধকুমার নদের ওপর ১২০০ ফুট দীর্ঘ সোনাহাট রেলসেতু নির্মিত হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সৈন্যদের প্রবেশ ঠেকাতে সেতুটির একটি অংশ ভেঙে দেওয়া হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার দীর্ঘদিন পর এরশাদ সরকারের আমলে সেতুটি মেরামত করে ভূরুঙ্গামারী দক্ষিণের তিন ইউনিয়ন ও কচাকাটা ও মাদারগঞ্জের সাথে সড়ক যোগাযোগ সচল করা হয়।
এইচএসসি পরীক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস, রাজিমুল ও সোহেল রানা জানান, “পরীক্ষার হলে সাড়ে নয়টার মধ্যে প্রবেশ করতে হয়। রিজার্ভ অটো নিয়ে এসে দেখি ব্রিজ বন্ধ। বাধ্য হয়ে পায়ে হেটে পথ চলা শুরু করেছি।” অন্যদিকে, স্থানীয় অটোচালক বাবুল বলেন, “চর ভূরুঙ্গামারীর নতুন হাট থেকে ৮ জন যাত্রী রিজার্ভ নিয়ে কুড়িগ্রাম যাওয়ার জন্য এসেছি। এসে দেখি সেতুতে ট্রাক আটকা পড়েছে। কোন যানবাহন চলছে না। তাই যাত্রীরা নেমে গেছেন। আজ অটো ভাড়ার টাকা আয় করা সম্ভব হবে না।”
কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম জানান, “অতিরিক্ত পাথরবোঝাই একটি ট্রাকের কারণে সেতুর পাটাতন ভেঙে গেছে। মেরামতের কাজ চলছে। খুব দ্রুত যানচলাচল স্বাভাবিক হবে।