প্রচ্ছদ সারাবাংলা শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে প্রশাসন ক্যাডারে উল্লাস পালের সাফল্য

শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে প্রশাসন ক্যাডারে উল্লাস পালের সাফল্য

দ্বারা নিজস্ব প্রতিনিধি
০ কমেন্ট 2 মিনিট পড়ুন
শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে প্রশাসন ক্যাডারে উল্লাস পালের সাফল্য

শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে পরাজিত করে বাংলাদেশ প্রশাসন ক্যাডারে সফলভাবে স্থান করে নিয়েছেন শরীয়তপুরের উল্লাস পাল। তিনি ৪৪তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়ে সাফল্যের এক অনন্য উদাহরণ স্থাপন করেছেন।

উল্লাস পাল, যিনি ভেদরগঞ্জ উপজেলার রামভদ্রপুর ইউনিয়নের কার্তিকপুর এলাকার বাসিন্দা, জন্ম থেকেই দুটি হাত ও পা বাঁকা নিয়ে বেড়ে উঠেছেন। হাঁটতে পারেননি স্বাভাবিকভাবে, তবে পরিবারের সহায়তা ও ভারতের চিকিৎসার মাধ্যমে এক পায়ে অস্ত্রোপচার করিয়ে ধীরে ধীরে হাঁটতে শুরু করেন।

তার শিক্ষাজীবন শুরু হয় কার্তিকপুর পালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। বর্ষার দিনে তার বাবা তাকে প্রতিদিন স্কুলে পৌঁছে দিতেন। বাম হাতে লিখে তিনি লেখাপড়া করেছেন। খেলাধুলায় আগ্রহ থাকলেও শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে অংশ নিতে পারেননি, যা ছিল তার জন্য একটি কষ্টের বিষয়।

২০১০ সালে এসএসসি এবং ২০১২ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। এরপর ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবস্থাপনা বিভাগে, সেখান থেকে বিবিএ ও এমবিএ সম্পন্ন করেন। চাকরি খুঁজতে গিয়ে একের পর এক পরীক্ষায় অংশ নেন। ৪০তম ও ৪১তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৪১তমতে জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে সুপারিশ পান। তবে তিনি থেমে থাকেননি। ৪৩তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়ে নড়িয়া সরকারি কলেজে লেকচারার হিসেবে যোগ দেন। কিন্তু তার মূল লক্ষ্য ছিল প্রশাসন ক্যাডার, যা তিনি অর্জন করেন ৪৪তম বিসিএসে।

উল্লাস পাল বলেন, ‘রেজাল্টের সময় নিজের রোল নম্বর মিলিয়ে দেখি প্রশাসন ক্যাডারে নাম এসেছে, তখন আনন্দে চোখে জল এসেছিল। আমার পরিবারও খুব খুশি। সমাজের অনেকে ঠাট্টা করলেও আমি কখনও দমে যাইনি।

তিনি আরও বলেন, ‘প্রশাসন ক্যাডার একটি জনকল্যাণমুখী ক্ষেত্র। আমি চাই মানুষের সেবায় কাজ করতে। সমাজের সবাই যেন শারীরিক প্রতিবন্ধীদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়।

উল্লাসের সাফল্যে তার পরিবার, শিক্ষক ও প্রতিবেশীরা অত্যন্ত খুশি। তার মা আন্না রানী পাল বলেন, ‘ছেলেটা অনেক কষ্ট করে আজকের জায়গায় এসেছে। আমরা গর্বিত।’ তার বাবা উত্তম কুমার পাল বলেন, ‘ওর লেখাপড়ার আগ্রহ আর আমাদের ভালোবাসা মিলেই সে সফল হয়েছে।’ প্রতিবেশী রূপক পাল বলেন, ‘উল্লাস প্রমাণ করেছে প্রতিবন্ধকতা কোনো বাধা নয়। সে আমাদের গর্ব।

কার্তিকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. হারুন অর রশিদ বলেন, ‘উল্লাসের মতো মেধাবী, আত্মমর্যাদাশীল ছাত্র খুব কম দেখা যায়। ওর এই অর্জনে আমরা গর্বিত।

You may also like

মতামত দিন

ঠিকানা

marbanglasongbad logo

আমার বাংলা সংবাদ মিডিয়া এন্ড কমিউনিকেশন পক্ষে প্রকাশক কর্তৃক প্রকাশিত।

প্রকাশক ও সম্পাদক : হাসান মাহমুদ,
বিভাগীয় প্রধান ( অনলাইন): সাইফ উদ্দিন

জনপ্রিয় সংবাদ

নিউজলেটার

সর্বশেষ সংবাদ সবার আগে পেতে নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করুন।

Are you sure want to unlock this post?
Unlock left : 0
Are you sure want to cancel subscription?
-
00:00
00:00
Update Required Flash plugin
-
00:00
00:00