
শেরপুর জেলা শহরের গোপালবাড়ি এলাকার ইউনাইটেড স্কুলের ৫ম শ্রেণির ১৬ শিক্ষার্থীকে বেধড়ক বেত্রাঘাত করার অভিযোগ উঠেছে। ২৩ জুন, সোমবার দুপুরে এ ঘটনাটি ঘটে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুইজনকে রাতের বেলায় শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, বাকিদের স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন মারিয়া আক্তার জুঁই (১১) ও ফাতেমা আক্তার ঝুমা (১১)।
অভিভাবকদের অভিযোগ, ইউনাইটেড স্কুলের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা চলছিল। পরীক্ষা শেষে খাতা জমা দিতে দেরি করায় প্রধান শিক্ষক পঙ্কজ দেবনাথ ১৬ জন শিক্ষার্থীকে বেত দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। এ সময় তিন শিক্ষার্থী জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তাদের মাথায় পানি দিয়ে জ্ঞান ফিরিয়ে আনা হয়। পরে স্থানীয় ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদের বাড়ি পাঠানো হয়। কিন্তু রাতে শরীরে ব্যথা ও আতঙ্ক অনুভব করায় অভিভাবকরা জুই ও ঝুমাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। অভিভাবকরা এ ঘটনার বিচার দাবি করেছেন।
মারিয়া আক্তার জুঁই জানান, “আমাদের ক্লাসে পরীক্ষা চলছিল। বেল বাজানোর পর আমরা খাতা দিতে দেরি করেছিলাম। তাই আমাদেরকে পঙ্কজ স্যার বেত দিয়ে মেরেছে। ২০ জনের মধ্যে চারজন বাদে সবাইকে স্যার মেরেছে।” অন্যদিকে, ফাতেমা আক্তার ঝুমা বলেন, “আমার সেন্স ছিলো না। আমার অনেক ব্যাথা লেগেছে।”
অভিভাবক রিনা আক্তার বলেন, “স্কুল থেকে খবর আসে যে, আমার মেয়ে অসুস্থ। স্কুলে গিয়ে দেখি আমার মেয়ের মাথায় পানি দিচ্ছে। শিক্ষক বলেন যে, লেখাপড়া করলে এরকম পিটুনি খেতেই হবে। আমার মেয়ে ভয় পাচ্ছে।” স্বপ্না বেগম নামের আরেক অভিভাবক বলেন, “আমার মেয়ের অবস্থা বেশি খারাপ হয়েছিলো। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।”
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক পঙ্কজ দেবনাথ বলেন, “বিষয়টি যেমন মানুষ মনে করছেন সেটি নয়। শিক্ষার্থী ১৬ জন নয়, ১৩ জন। আমি লক্ষ্য করি শিক্ষার্থীরা বই বের করে লিখছিলো, তাই আমি দুইজন শিক্ষার্থীকে শাসন করি।”
শেরপুর জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আফরোজা আক্তার জাহান জানান, “দুই শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে আনার পর আমরা তাদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন পেয়েছি। তাদেরকে অবজারভেশনে রাখা হয়েছে।”