চট্টগ্রামে ২০২৩ সালের শেষের দিকে আদালত এলাকায় আইনজীবী হত্যাকাণ্ড ও সহিংসতার প্রেক্ষাপটে একাধিক মামলার তদন্ত চলাকালীন সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে বিস্ফোরক মামলায় এক দিনের জন্য জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছে আদালত। এই নির্দেশনা আদালতের বিচারক সোমবার (১৬ জুন) প্রদান করেন, যা তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের ভিত্তিতে দেওয়া হয়েছে।
আদালতের নির্দেশে, মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আগামী ২২ জুনের মধ্যে জমা দিতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার সূত্রপাত ঘটে ২০২২ সালের ২৬ নভেম্বর, যখন চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যাওয়ার পথে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের বিশেষায়িত গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পরদিন, ২৭ নভেম্বর, কোতোয়ালি থানায় দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদোহ মামলায় তাকে আদালতে হাজির করা হলে আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
চিন্ময় দাসের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ইসকন অনুসারীরা আদালত এলাকায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এই বিক্ষোভ চলাকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটে এবং আশপাশের মসজিদ, দোকান ও বিভিন্ন স্থাপনায় হামলার ঘটনা ঘটে।
ওইদিন বিকেলে, আদালতের প্রধান ফটকের বিপরীত পাশে রঙ্গম কনভেনশন হল সংলগ্ন গলিতে একদল ইসকন অনুসারীর হামলায় নিহত হন অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম। নিহতের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ২৯ নভেম্বর রাতে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন, যেখানে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।
পুলিশ ও অন্যান্য ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে ওইদিনের সহিংসতা নিয়ে আরও ৪টি মামলা দায়ের করা হয়। এই পাঁচটি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ চিন্ময় দাসের সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার দাবি করে এবং আদালতে আবেদনের মাধ্যমে তাকে একে একে ওই মামলাগুলোতে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
সবশেষে, এসব মামলার ধারাবাহিকতায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দায়ের করা মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা, যা আদালত সোমবার (১৬ জুন) অনুমোদন দেন।