শীতকালীন আগাম সবজি হিসেবে বরবটি চাষ করে শেরপুরের গারো পাহাড় অঞ্চলের কৃষকরা ভালো ফলনের স্বাদ চউছেন। এর ফলে, সেই এলাকার কৃষকরা নিজেদের দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হচ্ছে। পূর্বে গারো পাহাড়ের অনেক জমি অনাবাদি ছিল, কিন্তু এখন সেখানে নানা ধরনের সবজি চাষ হচ্ছে, যার মধ্যে বরবটির চাষে বিশেষ সাফল্য অর্জিত হয়েছে। বরবটির চারা রোপণের পর ৪০ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যেই ফলন আসে।
শেরপুরের শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার গারো পাহাড়ের কৃষকরা চলতি শীতকালীন মৌসুমে বরবটি এবং শিম চাষ করে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ উপার্জন করছেন। কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এই অঞ্চলের কৃষকরা বরবটি চাষে লাভবান হচ্ছেন এবং অনেক কৃষক এখন স্বাবলম্বী হয়েছেন।
শ্রীবরদী উপজেলার সিংগাবরুনা ইউনিয়নের পাহাড়ি অঞ্চলে প্রায় ২০ থেকে ২২টি গ্রামে বসবাসরত প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষের মধ্যে গারো, কোচ, হাজং, ঢালু এবং বানাইসহ বিভিন্ন উপজাতি সম্প্রদায়ের সদস্যগণ রয়েছেন। পূর্বে এখানে জমি অনাবাদি থাকতো, কৃষকরা বেকার ছিলেন এবং জীবনে অভাব-অনটন কাটাচ্ছিলেন। কিন্তু গত কয়কাবছরে ওই অনাবাদি জমিতে বরবটি ও শিম চাষ শুরু হয়েছে। স্থানীয় কৃষকরা জানান, মেঘাদল বাজারে প্রতিদিন ৩শ থেকে ৪শ মণ বরবটি বিক্রির জন্য আসছে। এখান থেকে শেরপুর জেলা ও ঢাকা সহ অন্যান্য জেলায় বরবটি সরবরাহ করা হয়। এই বাজারে প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ লাখ টাকার বরবটি বিক্রি হচ্ছে।
শ্রীবরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাহমুদুল হাসান জানান, বরবটি চাষের লক্ষ্যের আওতায় এ বছর ৫০ হেক্টর জমিতে বরবটির চাষ পরিকল্পনা ছিল, তবে কৃষকেরা ৬০ হেক্টর জমিতে চাষ করেছেন। চলতি শীতকালীন আগাম সবজি হিসেবে বরবটি উৎপাদন করে কৃষকরা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়েছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শাখাওয়াত হোসেন জানান, শেরপুর জেলার সীমান্তবর্তী শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী এবং নালিতাবাড়ী উপজেলায় প্রায় ৭৫ হেক্টর জমিতে বরবটি এবং শিম চাষ হয়েছে। কৃষি বিভাগ কৃষকদের যথাযথ পরামর্শ ও সহায়তা প্রদান করছে।