
বাংলা চলচ্চিত্রের বিখ্যাত গান, ‘আকাশেতে লক্ষ তারা চাঁদ কিন্তু একটারে’ শুনেছেন অনেকেই। রাতে আকাশের দিকে তাকালেও একটি চাঁদই দেখা যায়। তবে ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে পৃথিবীতে নতুন আরও একটি চাঁদ দেখা যাবে বলে জানিয়েছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।
পৃথিবীর আকাশে আজ রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাত থেকেই দৃশ্যমান হচ্ছে দ্বিতীয় চাঁদ। যা মূলত একটি গ্রহাণু। এই দ্বিতীয় চাঁদটি আগামী ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত আকাশে অবস্থান করবে।
নতুন চাঁদটি মূলত একটি ছোট গ্রহাণু। নাম ‘২০২৪ পিটি৫’।
পৃথিবীর আকাশে দ্বিতীয় চাঁদের আগমন নক্ষত্রবিজ্ঞানী এবং মহাকাশ নিয়ে আগ্রহীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্দীপনা তৈরি করেছে। যা অনেকেই দেখার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছেন।
বাংলাদেশ থেকে কী এই চাঁদ দেখা যাবে?
দ্বিতীয় এই চাঁদটি এতটাই ক্ষুদ্র যে এটি খালি চোখে পৃথিবীর কোনো জায়গা থেকে দেখা যাবে না। এছাড়া এই গ্রহাণুটির উজ্জলতাও কম।
দুর্ভাগ্যবশত দূরবীণ এবং সাধারণ মানুষের কাছে থাকা টেলিস্কোপ দিয়েও এটি দেখা যাবে না। যদি কেউ চাঁদটি দেখতে চান তাহলে মহাকাশ গবেষণায় যেসব পেশাদার সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয়; সেগুলো ব্যবহার করতে হবে। অর্থাৎ পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সাধারণ মানুষের মতো বাংলাদেশের সাধারণ মানুষও খালি চোখে চাঁদটি দেখতে পারবেন না। এজন্য ব্যবহার করতে হবে পেশাদার সরঞ্জাম। কমপক্ষে ৩০ ইঞ্চি ব্যাসের শক্তিশালী টেলিস্কোপের মাধ্যমে দেখা যাবে চাঁদটি।
অসাম অ্যাস্ট্রোনমি পডকাস্টের সঞ্চালক ড. জেনিফার মিলার্ড ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে বলেছেন, “পেশাদার টেলিস্কোপ এই ক্ষুদ্র চাঁদের ছবি তুলতে পারবে। আপনারা অনলাইনে এই ক্ষুদ্রাকৃতির বিন্দুর সুন্দর ছবি দেখতে পারবেন। যেটি আকাশের তারার পাশ দিয়ে ছুটে যাচ্ছে।”
জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, আকারে ছোট নতুন চাঁদটি অর্জুন গ্রহাণু বেল্টের অন্তর্গত। আর অর্জুন গ্রহাণু বেল্ট পৃথিবী থেকে প্রায় ৯ কোটি ৩০ লাখ মাইল দূরত্বে অবস্থিত। ফলে অনেক দূর থেকে পৃথিবীকে অনুসরণ করে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করবে। এরপর আবার অর্জুন গ্রহাণু বেল্টে ফিরে যাবে। ফিরে যাওয়ার আগে মাত্র দুই মাস চাঁদের মতো পৃথিবীর আকাশে দেখা যাবে।
নতুন এই ক্ষুদ্র চাঁদকে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা মিনি-মুন ইভেন্ট হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তাঁদের মতে, ‘স্বল্প সময়ের জন্য এ ধরনের গ্রহাণু আমাদের পৃথিবীকে আবর্তন করতে পারে। যেকোনো গ্রহাণুকে মিনি-মুন হওয়ার জন্য পৃথিবীর প্রায় ২৮ লাখ মাইলের কাছাকাছি আসতে হবে। এ অবস্থায় বস্তুটি অস্থায়ীভাবে পৃথিবীর আকর্ষণে আবদ্ধ হয়ে যায়।’
গ্রহাণুটি গত ৭ আগস্ট প্রথম শনাক্ত করে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার ‘গ্রহাণু টেরেস্ট্রিয়াল-ইমপ্যাক্ট লাস্ট অ্যালার্ট সিস্টেম’ (অ্যাটলাস)।
পৃথিবীর আকাশে এর আগেও ক্ষুদ্র চাঁদের দেখা মিলেছে। আবার এমন কিছু ক্ষুদ্র চাঁদ পৃথিবীর কাছে এসেছিল যেগুলো কেউ শনাক্ত করতে পারেনি। যেমন গ্রহাণু ২০২২ এনএক্স১; যেটি ১৯৮১ ও ২০২২ সালে পৃথিবীর কাছে এসেছিল।