ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রার জন্য তৈরি করা ‘ফ্যাসিবাদের প্রতিকৃতি’ আগুন সম্পূর্ণভাবে পুড়ে গেছে। আগুনে আংশিকভাবে পুড়ে গেছে শান্তির পায়রা।
আজ শনিবার ভোর আনুমানিক সাড়ে ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মো. ইসরাফিল এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মো. ইসরাফিল বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতিকে টার্গেট করে আগুন লাগানো হয়েছে। ওই প্রতিকৃতি পুরোটাই পুড়ে গেছে। একইসাথে পায়রার অবয়বটাও পুড়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিস আসতে আসতে ওটা পুরোটাই পুড়ে যায়।’

গত কয়েকদিন ধরেই এ বছরের আনন্দ শোভাযাত্রার উদ্দেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে প্রধান মোটিফগুলো তৈরির কাজ চলছিল। এ বছরের প্রতিপাদ্য ছিল ‘নববর্ষে ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’। প্রতিপাদ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এ বছর প্রধান মোটিফগুলোর মধ্যে ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি রাখা হয়েছিল।
দেখা যায়, বাঁশ-কাঠ দিয়ে একটি প্রতিকৃতির রূপ দেওয়া হয়েছিল। যেটি দেখতে সাবেক ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রধান শেখ হাসিনার মুখায়ভবের মতো বলে অনেক মত দিয়েছেন। মুখায়ভবটির মুখে দুটি বড় দাঁত রাখা হয়েছে। মাথায় দুটি শিং রাখা হয়েছে। এই মোটিফটি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এরই মধ্যে তদন্ত শুরু করেছে বলেও জানান মো. ইসরাফিল।
সরেজমিনে দেখা যায়, চারুকলার প্রাঙ্গণে আগুনে ফ্যাসিবাদের প্রতিকৃতিটি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এছাড়া শান্তির পায়রা এবং ওপরের শামিয়ানাও পুড়ে গেছে। পুড়ে যাওয়া এ প্রতিকৃতিগুলোর ছাই পড়ে আছে ঘটনাস্থলে।

এ ঘটনা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ। তবে তদন্ত না হওয়ার আগে কিছু নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তিনি।
সাইফুদ্দীন আহমেদ বলেন, সেখানে সিসিটিভি রয়েছে। তবে আমরা এখনো ফুটেজ দেখতে পারিনি। দেখলে প্রকৃত ঘটনা জানতে পারবো। আমরা শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান সকাল ১০টায় একটি জরুরি সভা ডেকেছেন। সেখানে আলোচনা করে আমরা তদন্ত কমিটি করবো
এবারের নববর্ষের প্রতিপাদ্য ঠিক করা হয়েছে ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’। এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এবারকার প্রধান মোটিফ ছিল ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’।
এদিকে, এবার ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’র নাম পরিবর্তন করে করা হয়েছে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’। এই শোভাযাত্রায় ২৮টি জাতিগোষ্ঠী অংশ নেবে।