
নোয়াখালীর হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নে আমেনা বেগম (৫০) নামে এক নারীর নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ বিপাকে পড়েছে। গত বুধবার (২৮ মে) রাতে উপজেলার নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের শতফুল গ্রামে এমরান উদ্দিনের বাড়িতে গলা কেটে হত্যা করা হয় আমেনা বেগমকে। হত্যার পর তার লাশ পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়।
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আজমল হুদা জানান, বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিকেলে তিনি এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, বৃষ্টির মধ্যেও নিঝুমদ্বীপ পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা রাত সোয়া ২টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন।
ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে নোয়াখালীতে বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া বইছে, ফলে হাতিয়ার সঙ্গে জেলা সদরসহ সারা দেশের নৌ চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ কারণে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। পুলিশ বাধ্য হয়ে মরদেহ থানায় কফিনে বরফ দিয়ে সংরক্ষণ করছে যাতে তা পচে না যায়।
নিহত আমেনা বেগম নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের শতফুল গ্রামের মো. এমরান উদ্দিনের স্ত্রী। তিনি ৪ মেয়ে এবং ২ ছেলের জননী। স্থানীয় বাসিন্দা আমিরুল মোমিন বাবলু জানান, আমেনার স্বামী এমরান স্থানীয় নিঝুমদ্বীপ বাজারে শুঁটকির ব্যবসা করেন। তাদের ৪ মেয়ে বিয়ে হয়ে গেছে এবং দুই ছেলে জেলা শহর মাইজদীতে লেখাপড়া করছে। ফলে এমরান ও আমেনা একা বাড়িতে বসবাস করতেন।
বাবলু আরও জানান, বুধবার সন্ধ্যায় এমরান বাড়িতে এসে দেখেন, স্ত্রী নামাজ পড়ছেন। এরপর তিনি বাজারে চলে যান। এমরান রাত পৌনে ১০টার দিকে বাড়ি ফিরে দেখেন, বসতঘরের দরজা খোলা এবং স্ত্রী ঘরে নেই। ঘরের মাঝের কক্ষে রক্ত পড়ে রয়েছে। বিষয়টি জানার পর তিনি স্থানীয় কয়েকজনকে ফোন করে জানান। পরে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে আমেনার রক্তাক্ত মরদেহ পুকুরে ভাসতে দেখা যায়। ধারণা করা হচ্ছে, কে বা কাহারা তাকে গলা কেটে হত্যা করে লাশ পুকুরে ফেলে দিয়েছে।
হাতিয়া থানার ওসি এ কে এম আজমল হুদা বলেন, নিহতের স্বজনেরা থানায় উপস্থিত রয়েছেন এবং পুলিশ হত্যার রহস্য উদঘাটনে চেষ্টা চালাচ্ছে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে সাগর উত্তাল রয়েছে এবং উপকূলীয় এলাকায় ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত জারি করা হয়েছে। নৌ-চলাচল স্বাভাবিক হলে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।