
ব্যাংক হিসাবে সর্বনিম্ন ১ লাখ টাকা থাকা ব্যক্তিদের কাছ থেকে আবগারি শুল্ক কাটা শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সর্বনিম্ন ১৫০ টাকা কাটা হচ্ছে।
সম্প্রতি হঠাৎ করে ব্যাংক থেকে ‘মোটা’ অংকের টাকা কাটায় অনেকে উদ্বেগ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দেন।
ব্যাংকগুলো জানায়, প্রতি বছরই জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পক্ষে ব্যাংকগুলো পঞ্জিকাবর্ষ (জানুয়ারি-ডিসেম্বর) ধরেই আবগারি শুল্ক কেটে রাখে। এরপর তা সরকারি কোষাগারে জমা করে। এবছরও তাই করা হয়েছে। শুল্ক কাটার পর সেগুলো সরকারি কোষাগারে জমা করা হয়।

দুই অর্থবছর বিরতি দিয়ে আবারও ব্যাংকে জমা টাকার ওপর আবগারি শুল্ক বাড়াচ্ছে সরকার। বর্তমানে ছয়টি স্তরে শুল্ক নেওয়া হলেও, আসছে বাজেটে এ স্তর হতে পারে আটটি। গ্রাহকের আমানত ১০ লাখ টাকার বেশি হলে বাড়তি অর্থ দিতে হবে। তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, এভাবে শুল্ক বাড়ানো হলে ব্যাংকে আমানত রাখতে নিরুৎসাহিত হবেন গ্রাহকেরা।
২০২০-২১ অর্থবছরে ব্যাংকে থাকা টাকার ওপর আবগারি শুল্কের পরিমাণ বাড়ানো হয়। বছরে কোনো ব্যাংক হিসাবে আমানতের পরিমাণ ১ লাখ টাকার বেশি হলে আবগারি শুল্ক দিতে হয়। বর্তমানে শুল্কের স্তর ছয়টি থাকলেও ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে তা আটটি করা হচ্ছে। বর্তমানে এক লাখ থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত দেড় শ টাকা ও পাঁচ লাখ টাকা থেকে ১০ লাখ পর্যন্ত ৫শ টাকা আবগারি শুল্ক রয়েছে।
১০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত গচ্ছিত অর্থে তিন হাজার টাকা আবগারি শুল্ক কেটে নেয় এনবিআর। এটি ভেঙে দুটি স্তর করা হচ্ছে। ৫০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ৫ হাজার টাকা আবগারি শুল্ক বসতে পারে।

১ কোটি থেকে ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত স্তরটিও ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। ১ কোটি থেকে ২ কোটি টাকা পর্যন্ত ১০ হাজার টাকা এবং ২ কোটি থেকে ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত ২০ হাজার টাকা শুল্ক দিতে হতে পারে। আর ৫ কোটি টাকা অতিক্রম করলে, আবগারি শুল্কের পরিমাণ ৪০ হাজারের পরিবর্তে ৫০ হাজার টাকা করা হতে পারে।
এ বিষয়ে অর্থনীতি সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, নতুন করে আবগারি শুল্ক বাড়ানো অযৌক্তিক। এতে সঞ্চয়ের প্রতি অনীহা তৈরি হলে, অনুৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগের ঝুঁকি বাড়বে।
বর্তমানে ব্যাংকের জমা টাকা ও বিমান টিকিট ক্রয়, এই দুই খাতের ওপর আবগারি শুল্ক নেয় এনবিআর।