
ছাত্র-জনতার ২৩ দিনের দেশ কাঁপানো আন্দোলনে পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগপত্র জমা দেন শেখ হাসিনা। এর পর গণভবন থেকেই হেলিকপ্টারে দেশ ছাড়েন। সে সময় তার সঙ্গে ছিলেন তার বোন শেখ রেহানা। বর্তমানে তিনি ভারতে রয়েছেন।
দেশত্যাগের প্রায় সাত দিন পর নীরবতা ভাঙেন শেখ হাসিনা। সরকার পতনের পেছনে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের দিকে অভিযোগ করেছেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্টের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। তার বক্তব্যে ব্যাখ্যা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা রয়েছে, এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে ওয়াশিংটন। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জ্যঁ-পিয়েরে গতকাল সোমবার ওয়াশিংটনে প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, এমন অভিযোগ ডাহা মিথ্যা।
ব্রিফিংয়ে কারিন জ্যঁ-পিয়েরেকে প্রশ্ন করা হয়, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অভিযোগ করেছেন, তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরতে বাধ্য করার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা আছে। বাংলাদেশের একটি দ্বীপ ওয়াশিংটনের হাতে তুলে না দেওয়ার কারণে তাঁর (শেখ হাসিনা) এমন পরিণতি। দ্বীপটি দিতে রাজি হলে তিনি হয়তো ক্ষমতায় টিকে যেতেন। এমন অভিযোগের বিষয়ে মার্কিন প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া কী?
জবাবে কারিন জ্যঁ-পিয়েরে বলেন, ‘এসবের পেছনে আমরা জড়িত নই। মার্কিন প্রশাসনের জড়িত থাকা নিয়ে যেকোনো প্রতিবেদন বা গুঞ্জন ডাহা মিথ্যা, একদমই সত্য নয়।’
কারিন জ্যঁ-পিয়েরে আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ নিজেদের জন্য এই পছন্দ বেছে নিয়েছেন। আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশে সরকারের ভবিষ্যৎ দেশের মানুষই নির্ধারণ করবেন। এটাই আমাদের অবস্থান। তাই এমন কোনো অভিযোগ করা হলে আমি এখানে যা বলেছি, সব সময়ই তা বলব, এটা একদমই সত্য নয়।’
গত রোববার ভারতের দ্য প্রিন্টসহ ভারতের কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে শেখ হাসিনার একটি বার্তার বরাতে খবর এসেছিল যে তিনি বলেছেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপ দিতে রাজি হননি বলেই তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে। আর এর পেছনে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
তবে শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় রোববার রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ট থেকে বার্তা দেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘আমার মায়ের পদত্যাগের বিষয়ে একটি বিবৃতি গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে, যা পুরোপুরি মিথ্যা ও বানোয়াট। আমি একটু আগে তাঁর (শেখ হাসিনা) সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছি। তিনি ঢাকা ছাড়ার আগে বা ঢাকা ছাড়ার পরে এ পর্যন্ত কোনো বিবৃতি দেননি।’